দেশের প্রচলিত মেগা ভ্যারাইটির ধানের মধ্যে জিংকের সন্নিবেশন ঘটাতে হবে-ড. আনসারি
আমাদের দেশের মানুষের শরীরে জিংকের অপুষ্টি জনিত রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঘাটতিটি বর্তমানে প্রকট। অত্যন্ত সহজেই ধানের মাধ্যমে মানব শরীরে জিংকের সন্নিবেশন ঘটানো সম্ভব। এর জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো দেশের প্রচলিত মেগা ভ্যারাইটির ধানের মধ্যে জিংকের সন্নিবেশন ঘটানো।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে বায়োফর্টিফাইড জিঙ্ক রাইস সম্প্রসারণের মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণে সম্ভাবতা ও করণীয়" শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এসিআই এগ্রিবিজনেসেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ. এইচ. আনসারি।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। সঞ্চালনা করেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রনব সাহা। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড্ নিউট্রিশন (গেইন) বাংলাদেশ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিলো এম্পিরিক রিসার্স লিমিটেড।
ড. আনসারি বলেন, কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এ কাজগুলি নিয়ে ভাবতে হবে এর পাশাপাশি দেশের আপামর ভোক্তাদের কথাও বিবেচনায় রাখতে হবে। সবাই একরকম চাউল পছন্দ করে না; কেউ মোটা চাউল আবার কেউবা চিকন চাউল পছন্দ করে। তাছাড়া সবার ক্রয় ক্ষমতাও এক নয়। অন্যদিকে কেবল জিংকের সন্নিবেশন ঘটালেও চলবে না ধানের উৎপাদনশীলতা ও জীবনকাল কেমন গবেষকদের সেটাও গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। কারণ কৃষক ধানের দাম না পেলে তিনি উৎপাদন করতে আগ্রহী হবেন না। রাইস মিলারদের আগ্রহী করতে হবে যাতে তারা প্যাকেট করে ব্রান্ডিং করে বিক্রি করতে পারে। তাহলে মিলাররা জিংকের পরিমাণ উল্লেখ পূর্বক প্যাকেটজাত করে ভোক্তাদের পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করবে। এর ফলে অতি দ্রুত ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাবে বলে উল্লেখ করেন ড. আনসারি।
এসিআইয়ের এসিআই সীডের উদ্ভাবিত একটি হাইব্রড জাত ACI-1 এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন তাদের এই জাতটি কৃষক পর্যায়ে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে কারণ এটাতে জিংকের পরিমাণ ২৭ পিপিএম। মাত্র ১০০ দিন জীবনকাল এ ছাড়া এই জাত চাষে ইন্টারক্রপিং করার সুযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি এই ধরনের জাতগুলো যেগুলো বাজারে বিদ্যমান রয়েছে সেগুলোর মধ্যে জিংকের সন্নিবেশন ঘটালে অতি দ্রুত জনপ্রিয় হবে এ উদ্যোগ। ফলে কৃষক থেকে খাবারের টেবিল পর্যন্ত জনপ্রিয় করতে ধান বিজ্ঞানী ও গবেষকদের আরো গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।
ড. বলেন, অনেক মেগাভ্যারাইটি রয়েছে, যেগুলোতে কৃষক ও মিলারদের আগ্রহ বেশি। সে জাতগুলোতে জিংক প্রবেশ করানো যায় কিনা সেটা দেখা প্রয়োজন। এছাড়া একটি ভ্যারাইটি জনপ্রিয় করতে হলে জীবনকাল অবশ্যই স্বল্পমেয়াদী হতে হবে।